বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর ঘিরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। টানা তিনদিন সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে। মিয়ানমারের আকাশে যুদ্ধ বিমান চক্কর ও বোমা বর্ষণে কাঁপছে টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকা। এতে বিস্ফোরণের কম্পনে টেকনাফের একটি গ্রামের অন্তত ২৫ টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মানুষ।
টেকনাফ সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ বিরতির পর সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। ওই সময় দেখা গেছে আকাশে যুদ্ধ বিমানের চক্করও। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিস্ফোরণের শব্দ শোনা না গেলেও দিবাগত রাত ১ টা থেকে আবারও শুরু হয় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। যা মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এ সময়ও মিয়ানমারের আকাশে যুদ্ধ বিমানের চক্কর দেখা গেছে। বিমানের চক্করের সাথে সাথে ভেসে আসে বিকট শব্দ। বুধবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তও একই ধরণের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ও যুদ্ধ বিমানের চক্কর দিতে দেখা গেছে।
এতে কাঁপছে টেকনাফের সীমান্ত এলাকা। এতে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের আছারবুনিয়া গ্রামের অন্তত ২৫ টি বাড়িতে ফাটলের তথ্য পাওয়া গেছে।
সাবরাং ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শরীফ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের মংডু শহরের পূর্বে চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদীর আছারবুনিয়া গ্রাম। বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা। এতে গ্রামটি ২৫ টি মাটির দেয়ালের বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই গ্রাম সহ সীমান্তের গ্রামের মানুষগুলো রাতে নির্ঘুম থাকে। মর্টার শেলের বিকট এ শব্দে ঘুম যাওয়া যায় না। রাত হলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দ্বিগুণ বেড়ে যায়। হযত বা নাফনদীর কারণে বোমা বা মটারশেল এপারে এসে না পড়লেও শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ স্থলবন্দর ও দমদমিয়া এলাকায় কয়েকটি গুলি এসে পড়েছে স্থানীয় লোকজনের বসতবাড়ি ও অফিসে ।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিকট বিস্ফোরণের কাঁপুনিতে মানুষের বসবাড়ির দেওয়াল ফেটে গেছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পাশাপাশি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আছাববুনিয়া এলাকার সমাজ কমিটির সভাপতি রফিক উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাতে বোমার শব্দে কাঁপুনিতে এলাকার প্রায় ২০-২৫টি সেমিপাকা টিনশেড ও মাটির দেওয়ালের বড় বড় ফাটল ধরেছে। এখন এসব ঘরে বসবাস করা ঝুঁকিপূণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ধরে পড়তে পারে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, আতঙ্কে সীমান্তবতী গ্রামের মানুষজন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তাঁদের নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হচ্ছে। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফনদী ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক আছে। বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply